নবী মোহাম্মদকে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে বাঁশখালীতে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রের বিরুদ্ধে তৌহীদি জনতার মিছিল
৩০ জানুয়ারী ২০২৩, ১৯:২৮ পিএম
সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে কটুক্তি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহার ছড়া ইউনিয়নের কলেজ পড়ুয়া ছাত্র শাহেদ বিন কাশেম (৩৪) নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। জনাব শাহেদ বিন কাশেম বাহার ছড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দীঘারপাড়া গ্রামের হাছিম আলী বাপের বাড়ির মৃত মোহাম্মদ আবুল কাশেমের পুত্র। শাহেদ বিন কাশেমের বিরুদ্ধে স্থানীয় মুসলমানদের অভিযোগ যে শাহেদ ইসলামের নবী মোহাম্মদকে ছাগল বলে এবং নবীর সাহাবিদের অশালীন ভাষায় কটুক্তি করে একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
শাহেদ বিন কাশেম যেই পোস্ট টি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন সেটি অন্বেষণ নিউজের হাতে এসে পৌঁছেছে৷ তার সেই ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
"যুদ্ধে ক্লান্ত এক সাহাবীর প্রশ্নের উত্তরে নবী বললেন। তোমরা বহুদিন তোমাদের সুখ হইতে দূরে আছো। তোমরা অনেক দিন তোমাদের স্ত্রীদের থেকে বিচ্ছিন্ন। এই অবস্থায় এখনই তোমাদের যৌনমিলন করা একান্ত প্রয়োজন। তোমরা যৌনকর্ম করিবার জন্য আশেপাশের গ্রাম থেকে স্ত্রী এবং তাদের কন্যাদের ধরে আনতে পারো। তোমরা তোমাদের সাথে নিয়ে আসা পশুগুলোর সঙ্গেও যৌনকর্ম করতে পারো। এছাড়াও তোমরা একে অপরের সঙ্গে পায়ু মিলন করে নিজেদের যৌন ইচ্ছা নিবৃত্ত করতে পারো"
উক্ত পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে, এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ক্ষোভে ফেঁটে পড়েন এবং শাহেদ বিন কাশেমের ফাঁসির দাবিতে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর বাহার ছড়া আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল বের করেন। মিছিলে উপস্থিত জনতা দাবী করেন নবীর অবমানোনাকারী শাহেদ বিন কাশমকে জনসম্মুখে এনে ফাঁসি দিতে হবে। উপস্থিত জনতার কেউ কেউ দাবী করেন শাহেদ বিন কাশেমকে খুঁজে পেলে তাকে জনসম্মুখে পুড়িয়ে মারতে হবে৷
মিছিলটি শনিবার (২৮) জানুয়ারি সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার উত্তর বাহারছড়া থেকে শুরু হয়ে বশির উল্লাহ মিয়াজি বাজার চত্বরে এসে শেষ হয়। মিছিলটির নেতৃত্ব দেন মাওলানা সৈয়দুল আলম বাহারি। তিনি মিছিল থেকে দাবী করেন আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দোষীকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় তারা আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দিবেন।
এ বিষয়ে বাঁশখালী থানার ওসি মোঃ কামাল উদ্দিন পিপিএম বলেন মহা নবীকে নিয়ে কটুক্তিকারীকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে। দোষীকে দ্রুতই গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ মোহাম্মদ বিন কাশেমের তিনজন বন্ধু মোহাম্মদ নাঈম তালুকদার মোর্শেদ, ইলিয়াস তালুকদার এবং বোরহানদ্দীনকে জিজ্ঞাসাবদের কথা বলে থানায় আটক করে নিয়ে যায়৷ পরবর্তীতে সেই তিন জনের মধ্যে একজনকে পুলিশ ছেড়ে দেন এবং বাকি দুজনকে আটক করে থানায় রেখে দেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাঁশখালী থানার পুলিশ মোহাম্মদ বিন কাশেমের বাড়ি গিয়ে মোহাম্মদ বিন কাশেমকে খুঁজে না পেয়ে তার মা, ভাই, বোন দিল আফিরোজা বেগম (৩৫) এবং বোনের ছোট একটি বাচ্চা রামিমা (১৫) কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়৷ থানায় নিয়ে যাওয়ার পর মোহাম্মদ বিন কাশেমের ভাইকে পুলিশী হেফাজতে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে৷ এবং মোহাম্মদ বিন কাশেমের মা এবং বোনের উপরও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বর্তমানে মোহাম্মদ বিন কাশেম জীবন বাঁচানোর তাগিদে পলাতক রয়েছেন।