পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে খ্রিস্টানদের গির্জা এবং বাড়িতে হামলা ও লুটপাট
১৮ অগাস্ট ২০২৩, ০১:১১ এএম
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের জারনওয়ালা শহরে দু'জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে কয়েক হাজার উগ্রপন্থী মুসলিম সংগঠিত হয়ে কয়েকটি চার্চে আগুন দেয় এবং স্থানীয় খ্রিস্টানদের বাড়িতে হামলা এবং লুটপাট চালায়। এতে ঘরছাড়া হন শত শত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।
প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে এই তাণ্ডব চালানো হয়।স্থানীয় মসজিদের মাইক থেকে এক ধর্মীয় নেতা সহিংসতায় উসকানি দেন বলে স্থানীয়রা জানান। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও ওই সময় হামলাকারীদের তারা কোনো বাধা দেয়নি।
ইতোমধ্যে এসব ঘটনার বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। এতে দেখা যায়, গির্জাগুলোয় ভাঙচুরের পর আগুন দেওয়া হয়েছে। অনেক ভবনের প্রাচীর পর্যন্ত ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিছু কিছু বাড়ির সব জিনিস পুড়ে গেছে।
এই ঘটনায় ধর্মানুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিসহ শতাধিক হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এবিষয়ে পাঞ্জাবের তথ্যমন্ত্রী আমির মীর বলেন, প্রাথমিক তদন্তে কুরআন অবমাননার ঘটনাটি পরিকল্পিত হিসেবে জানা গেছে। তবে এর স্বপক্ষে তিনি কোন প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক উসমান আনোয়ার বৃহস্পতিবার বলেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে এই হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাকিস্তানে কোরআন অবমাননার খবরে গির্জা ও বাড়িঘরে হামলা করা হয়েছে। এ নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তদন্ত করে দ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানাই। '
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক কাকারও এই সহিংসতার নিন্দা করেছেন এবং হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ধর্ম অবমাননা পাকিস্তানের সবচেয়ে সংবেদনশীল বিষয়গুলোর মধ্যে একটি। আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় মানবাধিকারী গোষ্ঠীগুলো অতীতে বলেছে পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ প্রায়শই ব্যক্তিগত প্রতিশোধ নিতে ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হন।