শ্রীমঙ্গলে ধর্ম অবমাননার গুজব, আতঙ্কে স্থানীয় হিন্দুরা
০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:২৯ পিএম
গতকাল সিলেটের শ্রীমঙ্গলে একটি উগ্র ধর্মান্ধ ইসলামি গোষ্ঠীর আন্দোলন সংগঠিত হয়। সেখনকার উগ্র ধর্মান্ধ মুসলমানরা স্থানীয় হিন্দুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করার জন্য সুযোগ খুঁজছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
ধর্মান্ধ উগ্রবাদী গোষ্ঠী হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা চালানোর জন্য একটা ইস্যু তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন। অবশেষে তারা ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা কর্মীদের সহযোগিতায় একটি ধর্ম অবমাননার গুজব রটিয়ে একটা সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরি করেন। ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী অভিযোগ তুলেন যে প্রীতম দাস নামের এক যুবক, যিনি ছিলেন চা শ্রমিকদের ন্যায্য মুজুরির দাবী আদায়ের আন্দোলনের প্রথম সারীর একজন আন্দোলনকারী, তিনি ইসলামের ধর্মের নামে ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট দিয়েছেন।
কিছুদিন পূর্বে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করার ঘোষণা দেন, তখন প্রীতম দাস ও আন্দোলনকারী অন্যান্য নেতারা যারা চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবীর আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন তারা প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে মেনে নেন নি এবং তারা তাদের কাজে যোগদান করা থেকে বিরত থেকে তাদের ন্যায্য মজুরির দাবী আদায়ের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপরই প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ১৭৫ টাকায় বৃদ্ধি করেন।
যেহেতু প্রীতম আন্দোলনের নেতৃত্বের প্রথম সারিতে ছিলেন তাই সে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মী ও উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর রোষানলে পড়ে যান।
যার ফলে সেখানকার উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী এবং আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা মিলে একটা সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরি করে প্রীতম দাসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা শুরু করে। গতকাল সেখানকার স্থানীয় ধর্মান্ধ মৌলবাদী মুসলমান যারা হিন্দুদের বাড়িঘর এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা করার জন্য ইস্যু খুঁজছিলেন এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা মিলে প্রীতম দাসের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার ভুয়া অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করে এবং সেই আন্দোলন থেকে ঘোষণা দেয়া হয় যে যদি পুলিশ প্রীতম দাসকে গ্রেফতার না করে তাহলে তারা শুক্রবার জুমার নামাজের পর নিজেরাই প্রীতম দাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।
বাংলাদেশ সরকার এবং সেখানকার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি সম্পর্কে খুব ভালোভাবে অবগত আছে। খোদ সরকার দলের নেতাকর্মীরাই প্রীতম দাসের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত।
বর্তমানে প্রীতম দাস, তার পরিবার এবং সেখানকার স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন ভয়ে আতঙ্কে রয়েছে। এর আগেও আমরা দেখেছি এধরনের সাম্প্রদায়িক হামলার সময় পুলিশ কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি বরং তারা দাঁড়িয়ে দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।