আফগানিস্থানে নারী শিক্ষা অধিকারকর্মী গ্রেপ্তার
২৯ মার্চ ২০২৩, ১৪:০২ পিএম
আফগানিস্তানের এক নারী শিক্ষা অধিকারকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে তালেবান। একই সঙ্গে কিশোরী ও নারীদের শ্রেণিকক্ষে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। তার নাম মতিউল্লাহ ওয়েসা। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ‘পেনপাথ১’। তাঁর ভাই ও জাতিসংঘ আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানায়।
আফগানিস্তানের জাতিসংঘ মিশন টুইট করে লিখেছে, ‘পেনপাথ১’–এর প্রধান এবং নারীশিক্ষা অধিকারকর্মী মতিউল্লাহ ওয়েসাকে গতকাল সোমবার কাবুল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
৩০ বছর বয়সী ওয়েসা আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে নারীদের শিক্ষার ব্যাপারে সচেতন করতেন। কিন্তু এ কাজ করতে গিয়ে তিনি তালেবানের বাধার শিকার হন।
মতিউল্লাহর ভাই সামিউল্লাহ ওয়েসা এএফপিকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় মতিউল্লাহ নামাজ শেষ করে মসজিদের বাইরে আসতেই কয়েকজন তাঁকে থামান। তাঁরা দুটি গাড়িতে করে এসেছিলেন। মতিউল্লাহ তাঁদের পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তাঁরা তাঁকে মারধর করে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যান।
মতিউল্লাহর এই প্রতিষ্ঠান প্রত্যন্ত এলাকায় স্কুল প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরে ও বই বিতরণ করে। গ্রামে বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে নারীশিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান।
নারীদের জন্য মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার পর মতিউল্লাহ স্থানীয় লোকজনের সমর্থন জোগাতে প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে বেড়ান।
তালেবান সরকার গত বছর থেকে দেশটিতে প্রাথমিকের শ্রেণির ওপরে মেয়ে ও নারীদের জন্য স্কুল–কলেজ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বিশ্বের একমাত্র দেশ আফগানিস্তান, যেখানে নারীদের জন্য শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নারীশিক্ষার অধিকারের পক্ষে কথা বলার কারণে এপর্যন্ত অনেক মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতার করেছে তালেবান সরকার।
ওয়েসা দীর্ঘদীন ধরে নারী শিক্ষার জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি টুইটারে সোমবার শেষবারের মতো টুইট করেন। এর পরের দিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। টুইটে তিনি নারী স্বেচ্ছাসেবীদের একটি ছবি শেয়ার করেন। সেখানে তিনি জানতে চেয়েছেন, ইসলাম কী নারী শিক্ষার অধিকার দেয়নি?
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল। তখন তারা মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। নিষিদ্ধ করেছিল নারীদের চাকরি। এবার তারা প্রাথমিক শ্রেণি পর্যন্ত সব শিশুর স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিলেও এর ওপরের ক্লাসে মেয়েদের পড়াশোনা নিষিদ্ধ করেছে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েরা স্কুলে যেতে পারলেও সেখানেও মেয়েশিশুদের ঝরে পড়ার হার উল্লেখ করার মতো।