মাদ্রাসা ছাত্রকে পিটিয়ে মেরেই ফেলল শিক্ষক!
২০ জুন ২০২৩, ১৪:৩১ পিএম
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ মোহম্মদিয়া দাখিল মাদ্রাসা হিফজখানা ও এতিমখানা কমপ্লেক্সের নাজেরা শাখার ছাত্র কামরুল হোসেন শুভ (১৩) নামে এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে মাদ্রাসাছাত্র কামরুল হাসান শুভর পরিবারের দাবি, তাকে শিক্ষক পিটিয়ে হত্যা করেছে।
আজ রোববার সকালে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কামরুল হাসান শুভ রামগঞ্জ উপজেলার সাউধেরখিল ভুঁইয়া গাজী বেপারি বাড়ির দুবাই প্রবাসী কামাল হোসেন ও গৃহিণী রেখা বেগমের একমাত্র ছেলে।
রামগঞ্জ থানার ওসি মো. এমদাদুল হক জানান, পুলিশ লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
শুভর মা রেখা বেগম জানান, আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় মাদ্রাসা থেকে মোস্তফা কামাল নামের একজন শিক্ষক আমাকে কল দিয়ে জানান, আমি কামরুলের হুজুর বলছি—আপনার ছেলে অসুস্থ। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আপনি দ্রুত আসেন। মোবাইলে খবর পেয়ে হুজুরকে বলি আপনারা যত দ্রুত সম্ভব আমার ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন আমি আসছি। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার ছেলে আর নেই। আমি দেখতে পাই তার হাতে বিভিন্ন রকমের দাগ রয়েছে। আমার ছেলেকে মাদ্রাসায় মারধর করা হয়েছে। না হলে আমার ছেলে মারা যেত না।
শুভর চাচা জামাল হোসেন জানান, আমার একমাত্র ভাতিজা কামরুল হাসান শুভকে মাদ্রাসা শিক্ষকরা পিটিয়েছে। এমন কী ঘটনা ঘটল যে আমার ভাতিজাকে হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা গেল।
মাদ্রাসার সভাপতি হাফেজ মাওলানা জুনায়েদুল হকের বড় ছেলে নাজমুল হক আকন্দ বলেন, আমাকে আজ সকালে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ সাফায়েত হোসেন ফোন দিয়ে মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন বলে জানান। ফজরের নামাজের সময়ও ছেলেটি সুস্থ ছিল। কিন্তু ভোরে নাকেমুখে ফেনা বের হলে শিক্ষকরা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর কিছু অভিভাবক মাদ্রাসার দরজা জানালা ভাঙার চেষ্টা করেন। আমি এসে তাদের মূল ঘটনা উদ্ঘাটনে সহযোগিতা ও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে অভিভাবকরা চলে যান।
রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার গুনময় পোদ্দার জানান, ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে। আমরা কোনো কিছু নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। পুলিশকে জানানো হয়েছে, পুলিশ ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করলে বলতে পারবে মূল ঘটনা কী।
রামগঞ্জ থানার ওসি মো. এমদাদুল হক জানান, সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার গুনময় পোদ্দার আমাকে কল দিয়ে মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টি জানান।