ছিনতাইকারীদের হাতে প্রাণ গেলো মানুষের জীবন বাঁচানো নিশাদ এর
০৩ অক্টোবর ২০২৩, ২৩:৪৩ পিএম
নিশাদ আকরামের (২৪) রক্ত ‘ও-নেগেটিভ’। যেকোনো বিপদ, কিংবা রক্ত প্রয়োজন হলে মানুষের জীবন বাঁচাতে ছুটে যেতেন রাজশাহী কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী। কিন্তু ছিনতাইকারীরা তাকে বাঁচতে দেয় নি। তাদের হামলায় গুরুতর আহত হওয়ার ১৬ দিন পর মঙ্গলবার ভোরে মারা যান তিনি।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে হতবিহ্বল বাবা। শিক্ষক, সহপাঠীরাও শোকে পাথর হয়ে গেছেন। তারা বলছেন, শহরের হেঁতেমখা সবজিপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই ছিনতাইকারী, মাদকসেবীদের আখড়া। নিহতের শিক্ষক, বন্ধু ও সহপাঠীরা জানান, নিশাদ আকরাম যে কারও বিপদে এগিয়ে যেতেন। নিজের ও-নেগেটিভ রক্ত দিতে চলে যেতেন বিভিন্ন জেলায়।
নিশাদের এক বান্ধবী জানান, তিনি ও নিশাদ তাঁর এক অসুস্থ বান্ধবীকে হাসপাতালে রেখে ছাত্রাবাসে ফিরছিলেন। তখন নগরীর রাজারহাতা এলাকাট হেঁতেম খাঁ সবজিপাড়ায় দুই ছিনতাইকারী তাদের রিকশার গতিরোধ করে। এ সময় নিশাদের কলার চেপে ধরে একজন, অপরজন মাথায় রামদার উল্টোপাশ দিয়ে আঘাত করে। এতে রাস্তায় পড়ে যান নিশাদ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, দুজন ছিনতাইকারী তাদের রিকশা থামিয়ে আঘাত করলে চালক ভয়ে গতি বাড়িয়ে দেন। এ সময় নিশাদকে একজন ছিনতাইকারী ধরে রাখায় তিনি রাস্তায় পড়ে যান। দ্রুতগতিতে নিশাদের বান্ধবীকে নিয়ে রিকশাটি এগিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তার বান্ধবী রিকশা থেকে নেমে দৌড়ে নিশাদের দিকে এসে চিৎকার করতে থাকেন। এতে স্থানীয় কয়েকজন এগিয়ে এসে তাকে হাসপাতালে পাঠায়। হামলাকারী যুবকরা নিশাদের মানিব্যাগ ও মুঠোফোন নিয়ে যায়। তবে হাতঘড়ি কিছু দূরে পড়ে ছিল। হামলাকারি একজনের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল বলে জানা যায়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ভর্তির পর থেকেই নিশাদের চেতনা ফেরেনি। তার মাথার হাড় ভেঙে গিয়েছিল। মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিল, সেকারণে তাকে বাঁচানো যায়নি।
বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সেলিম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নামে সাত-আটটি মামলাও আছে। সেলিম পেশাদার ছিনতাইকারী। অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।