গাজীপুরে গার্মেন্টসকর্মীদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নারী শ্রমিকের মৃত্যু

Anweshan Desk

Forhad Hossain Fahad

০৮ নভেম্বর ২০২৩, ২০:১৫ পিএম


গাজীপুরে গার্মেন্টসকর্মীদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নারী শ্রমিকের মৃত্যু

ছবি : স্ত্রীর মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন স্বামী জামাল বাদশা

গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় পোশাক শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি সাড়ে ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় আঞ্জুয়ারা বেগম (৩০) নামক এক নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। কিছু পুলিশও আহত হয়েছেন।

পুলিশের গুলিতে নিহত শ্রমিক আনজুয়ারা সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চরনাটিপাড়া এলাকার জামাল হোসেন বাদশার স্ত্রী। তিনি কোনাবাড়ীর ইসলাম গার্মেন্টে সেলাই মেশিন অপারেটর হিসাবে কাজ করতেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হাসপাতালে স্ত্রীর লাশের পাশে থাকা কান্নারত জামাল বাদশা  বলেন, আমার স্ত্রী তো আন্দোলনে যায়নি। তাকে গুলি করে মারলো কেন? কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি জানান, আঞ্জুয়ারা সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কাজে ছিলেন। পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষের খবর পেয়ে কর্মস্থল থেকে বাসায় যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন। পথে পুলিশের গুলিতে আহত হন। হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহত আঞ্জুয়ারা খাতুন নয় বছর আগে জামাল বাদশার সঙ্গে ঘর বাঁধেন। স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে সংসার ছিল তার। অভাবের সংসারে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েন কাজের খোঁজে। সিরাজগঞ্জ থেকে গাজীপুরে এসে একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। মাত্র দেড় মাস আগে চাকরিতে যোগ দেন তিনি। গাজীপুরের কোনাবাড়ী ইসলাম গার্মেন্টস-২ নামে একটি পোশাক কারখানায় সেলাই মেশিন অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন। তার স্বামীও একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আশরাফ উদ্দিন শ্রমিকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, শ্রমিকরা আঞ্চলিক সড়কগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখেন এবং ভাঙচুরও চালান। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। আর নারী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি।’

পুলিশ, শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ বুধবার সকাল ৭টার পর থেকে কোনাবাড়িসহ আশপাশের এলাকার শ্রমিকরা মজুরি বোর্ডের ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় পুলিশ বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের মহাসড়কে উঠতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশও রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে কমপক্ষে দশজন শ্রমিক আহত হন। বিক্ষোভ চলাকালে শ্রমিকেরা যানবাহন ভাঙচুর ও সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন।

 

মানবাধিকার থেকে আরও


Link copied