ধর্ম প্রচারের আড়ালে অনলাইনে যৌন হয়রানি ও প্রতারণা
২৫ জুন ২০২৩, ২০:০৮ পিএম
ধর্ম প্রচারের আড়ালে নারীদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে তাদের পাঠাতেন অশ্লীল মেসেজ, ছবি ও পর্ণভিডিও এবং করতেন ব্ল্যাকমেইল। অভিযুক্ত এই ধর্ম প্রচারকের নাম এবিট ইরাওয়ান ইব্রাহিম লিউ বা এবিট লিউ (৩৮)। তিনি ইসলাম ধর্মপ্রচারক হিসেবে পরিচিত।
তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় এমন ১১টি অভিযোগ পাওয়ার পর ২০২১ সালে পুলিশের তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার তার বিরুদ্ধে ৫০৯ এবং ২৩৩ ধারায় মামলা হয়, তবে ২০২২ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারী তিনি মোটা অংকের জরিমানা দিয়ে জামিনে মুক্তি পান ৷ তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশের টেনমে ৩৯ এবং মালয়ে ২১ বছর বয়সী মোট ২ জন নারী মামলা দায়ের করেন। খবর মালেশিয়ান ইংলিশ গণমাধ্যম দ্যা স্টার এবং দ্য সান ডেইলি এর।
সিআইডি অফিসার আব্দুল জলিল বলেন, ২০২১ সালের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত এই অপরাধগুলো সংগঠিত হয়। তার বিরুদ্ধে বিচার চলমান।
পিডিআরএম সিনিয়র অডিও ভিডিও বিশ্লেষক এএসপি লতিফাহ আব্দুল আজিজ (৪৩) বলেন, একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৩১ মোবাইল ফোন থেকে মামলা সংক্রান্ত ৪৩৬টি ছবি উদ্ধার করা হয়েছে যা রয়্যাল মালয়েশিয়া পুলিশ (পিডিআরএম) ফরেনসিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছিল। পরীক্ষার পর তার মোবাইল ফোনে চারটি ভিডিও রেকর্ডিং, ২১৯টি স্ক্রিনশট পাওয়া গেছে। সে বেশ কয়েকটি পর্ণসাইট ভিজিট করেছিলো এবং উইকিপিডিয়ায় "যৌন হয়রানি","মালয়েশিয়ায় যৌন হয়রানি আইন", "অশ্লীল রসিকতায় জেলের ঝুঁকি" এবং "যৌন অপরাধের শাস্তি বিল" ইত্যাদিও অনুসন্ধান করেছিলো।
লতিফাহ বলেন, মোবাইল ফোনটি একটি সাদা খামে ছিল যখন এটি পিডিআরএম চেরাস সেলাঙ্গর ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল ৯আগস্ট ২০২১, বিকাল ৩:৩০ টায় যখন তিনি সেখানে ডিউটিতে ছিলেন। ডিভাইসটি পাওয়ার পর, একই তারিখে ফরেনসিক বিশ্লেষণ করার আগে এটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি এবং এটি ভালভাবে কাজ করছে তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি এটি পরীক্ষা করেছিলেন।
গত ২৩ জুন, ২০২৩ তিনি বিচার চলাকালীন সময় কোর্টে প্রসিকিউটর নর আজিজাহ এর কাছে তিনি এ সংক্রান্ত কিছু প্রমাণ হাজির করেন।
অভিযুক্ত এবিট লিউকে ম্যাজিস্ট্রেট নুর আসরাফ জোলহানি উক্ত বিচারে উপস্থিত না হওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন কারণ তার আইনজীবী রাম সিং আদালতকে জানিয়েছিলেন যে এবিট মক্কায় হজ পালন করছেন।
দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারার অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৩১ মে এই ধর্মপ্রচারক একটি পরিকল্পিত ভিডিওতে মুখে ট্যাটু পরিহিত একটি ইসলাম বিমুখ তরুণীকে ইসলাম ও বোরকার ছায়াতলে নিয়ে আসার ভিডিও বানান কিন্তু তার কিছুদিন পরই নেটিজেনরা তার ওই প্রতারণা ধরে ফেলেন এবং প্রচুর সমালোচিত হন।
ওই ভিডিও বানানোর কিছুদিন পরই তরুণীকে সাধারণ পোশাকেই দেখা যায় এবং এবং তার মুখে কোন ট্যাটু দেখা যায় না। পরবর্তী ওই তরুণী স্বীকার করে যে তাকে টাকার লোভ দেখিয়ে মুখে ট্যাটুর মেকআপ করিয়ে এই গল্প সাজানো হয়েছিলো। ওই ঘটনার পর তার অন্যান্য কর্মকাণ্ড নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিলো। অনেকে বলেছিলেন তার বাকিসব ভিডিওও সাজানো।