খাবারের অভাবে ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে আফগানরা
১৩ অগাস্ট ২০২৩, ০০:৩৯ এএম
খাবার আর পানির অভাবে ঘরের আসবাবপত্র পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন আফগানরা। চরম অর্থনৈতিক সংকটে বিপাকে দেশটির সাধারণ মানুষ। বেঁচে থাকার ন্যূনতম চাহিদা পূরণই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, জিনিসপত্র বিক্রি করে খাবার-পানির অভাব মেটাচ্ছেন অনেকেই। তালেবান ক্ষমতা দখলের পর বৈদেশিক সহায়তা বন্ধ হওয়ায় তৈরি হয়েছে এ পরিস্থিতি। খবর রয়টার্সের।
অনেকের কাছেই যা স্বপ্ন সেরকমই একটি সরকারি চাকরি করেন কাবুলের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান রাসুলি। কিন্তু তিনিও টাকার অভাবে গত দু’বছর ধরে ঠিকমতো খাবার তুলে দিতে পারছেন না তার পাঁচ সন্তানের মুখে। যা বেতন পান, আর্থিক সংকটে বিপর্যস্ত আফগানিস্তানে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুব সামান্য। তাই বাধ্য হয়েই একে একে ঘরের সব আসবাবপত্র বিক্রি করে দিয়েছেন আফগান নাগরিক।
এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হাবিবুর রহমান রাসুলি বলেন, গত দুই বছর ধরে বেতন পাই না বললেই চলে। বিকল্প কোনো আয় নেই। আমার ঘরে কিছু আসবাবপত্র ছিলো, সেগুলে বিক্রি করেই কোনোমতে টিকে আছি এখনও। এখন ঘরে শুধুমাত্র একটি সেলাই মেশিন অবশিষ্ট আছে, সেটিও বিক্রি করে দিতে হবে।
হাবিবুরের মতো একই পরিস্থিতি আরও লাখ লাখ আফগানের; অনেকের অবস্থা আরও শোচনীয়। কেউ কেউ প্রবাসে থাকা বন্ধু, আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে সাহায্য পেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় মোটেও যথেষ্ট নয়। বেকার অনেকেই হন্যে হয়ে চাকরি খুঁজছেন, আবার কেউ খুঁজছেন বিকল্প আয়ের পথ।
হাবিবুর রহমান রসুলি আরও বলেন, এমন বিপদেও দেশ ও বিদেশে থাকা আমার কিছু বন্ধু আর্থিক সাহায্য করেছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুব সামান্য। এছাড়া আমি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চাই। আমার মতো এই দেশের সবার পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।
দু’বছর আগে, তালেবান ক্ষমতা দখলের পর বিভিন্ন দেশে আফগানদের সম্পদ জব্দ করা হয়; শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিষেধাজ্ঞায় আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোও সাহায্য বন্ধ রেখেছে। আর তাতেই বিপর্যস্ত সহায়তা নির্ভর আফগান অর্থনীতি।
আফগানিস্তানের মানি এক্সচেঞ্জ মার্কেটের প্রধান আমিন জান খোস্তি এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের ব্যাংকগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। আমরা স্বাধীনভাবে কোম্পানি এবং অন্য দেশে টাকা ট্রান্সফার করতে পারছি না। আমাদের সরকারি এবং প্রাইভেট সব ব্যাংকই বর্তমানে খুবই দুর্বল। যার প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে।
প্রসঙ্গত, এখনও বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাথে কাটেনি তালেবান সরকারের দূরত্ব। আর তাই খুব শীঘ্রই এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনাও দেখছেন না বিশ্লেষকরা।