'কাদিয়ানীদের হত্যা করো' এবং 'ইহুদিরা কুত্তার বাচ্চা' - ইসলামিক নেতা আব্বাসী
১১ মার্চ ২০২৩, ০০:৪০ এএম
২০২০ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী , 'ঐতিহাসিক খতমে নবুয়ত সম্মেলন' নামক একটি ইসলামিক জলসায় আহমদীয়া মুসলিম সম্প্রদায়কে কাদিয়ানী আখ্যা দিয়ে তাদেরকে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে কাফের ঘোষণার দাবি নতুবা হত্যার ফতোয়া দেন ইসলামি বক্তা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী। এ সময় তিনি ইহুদিদেরকেও কুত্তার বাচ্চা বলে গালাগালি করেন৷ সেই ভিডিও সম্প্রতি তার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হয় এবং অনুসারীদের দ্বারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা হয়।
সেই ইসলামিক জলসায় তিনি বলেন, 'কাদিয়ানীরা' শুধু কাফেরই না, তারা হলো জিন্দিক। জিন্দিক বলা হয় এমন ব্যক্তিকে যে সুস্পষ্ট কুফরিতে লিপ্ত অথচ নিজেকে মুসলিম দাবি করে। তাই তারা(আহমদীয়ারা) কুখ্যাত কাফের যারা কিনা সাধারণ কাফেরেদের চেয়েও নিকৃষ্ট।
এসময় তিনি ইহুদিদের ব্যাপারে বলেন যে এদেশে স্বল্পসংখ্যক ইহুদি থাকতে পারে। কিন্তু কুত্তারা বাচ্চারা অল্প হলেও পরিবেশ নষ্ট করে দেয়।
বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "অনতিবিলম্বে 'কাদিয়ানীদের' কাফের ঘোষণা করতে হবে। নয়তো এদেশে যদি ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়ে যায় তবে মিছিল-মিটিংয়ের প্রয়োজন হবে না। তাদের যেখানেই পাওয়া যাবে শরিয়া আইন অনুযায়ী গর্দান উড়িয়ে দেয়া হবে।"
তিনি বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, "আপনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন ওলামায়ে কেরামের মুখপাত্র শামসুল হক ফরিদপুরীকে ওয়াদা কথা দিয়েছিলেন যে, দেশ স্বাধীন হলে কাদিয়ানীদের কাফের ঘোষনা করা হবে।
কিন্তু তার আশেপাশে ড. কামাল এবং সিরাজুল ইসলামের মত নাস্তিকরা ঘুরঘুর করতো বলে তিনি তা করতে পারেননি। আপনি তো নাস্তিকদের মাইনাস করেছেন। আপনার পিতার সবগুলো স্বপ্ন পূরণ করছেন। তাই আপনি যদি আপনার পিতাকে কবরে শান্তি দিতে চান তবে শীঘ্রই কাদিয়ানিদের কাফের ঘোষণা করুন৷ "
আব্বাসীর এভাবে প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়া নতুন নয়৷ তিনি প্রায় প্রতিটি ওয়াজ-মাহফিল বা ইসলামিক জলসায় এভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানি এবং হুমকি দিয়ে থাকেন। কিন্তু দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এরকম সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়া ফৌজদারি অপরাধ৷
সম্প্রতি আহমদীয়া মুসলিমদের উপর যে হামলা হলো যেটাতে নিহত হলো ২জন এবং অসংখ্য আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হলো সেটাতে এনায়েতুল্লাহ আব্বাসীর সরাসরি উস্কানি ছিলো। তার বিভিন্ন মাহফিলের উস্কানিমূলক বক্তব্যের ভিডিওগুলো উগ্র মুসলিমদের মাঝে খুবই জনপ্রিয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচুর প্রচার হয়ে থাকে।
এনায়েতুল্লাহ আব্বাসীর ব্যাপারে অন্বেষণ নিউজ দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে জানতে পেরেছে যে সরকারের উচ্চ মহলের সাথে আব্বাসীর রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক৷ নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এর এক সাংসদ জানিয়েছেন যে, সরকারের প্রভাবশালী একাধিক সাংসদ এর ছত্রছায়ায় থেকেই আব্বাসী এভাবে ধৃষ্টতা দেখায়। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ এর একজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাকেই ইঙ্গিত করেছেন আমাদের তথ্যদাতা সাংসদ৷
তাই আব্বাসীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উস্কানি এবং জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগে একাধিক মামলা চলমান থাকলেও তিনি গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হন ঐ বিশেষ মহলের ইশারায়৷
Video link :https://youtu.be/aJl7MOBmhXM