টাঙ্গাইলে হেফাজতে ইসলামের আপত্তির মুখে বন্ধ লালন স্মরণোৎসব
১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৮:৪৯ পিএম

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় হেফাজতে ইসলামের আপত্তির মুখে লালন স্মরণোৎসব বন্ধ করা হয়েছে। বুধবার রাত ৮টার দিকে মধুপুর উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ স্মরণোৎসব হওয়ার কথা ছিল বলে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সবুজ মিয়া জানান।
ফকির লালন সাইজির ১৩৪তম তিরোধান বর্ষ উপলক্ষে ‘মধুপুর লালন সংঘ’ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেনের থাকার কথা ছিল।
তিনি বলেন, “অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার রাতে আয়োজকরা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। এ ধরনের আয়োজন করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। মধুপুর লালন সংঘ প্রশাসনকে না জানিয়ে এ আয়োজন করেছিল।”
স্মরণোৎসব বন্ধের বিষয়ে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সবুজ মিয়া ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “হঠাৎ করেই খবর পাই, মধুপুর হেফাজতে ইসলাম আমাদের অনুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। এ নিয়ে গতকাল আলোচনা হয়েছে।
“এতে অংশ নেন উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল্লাহ, কওমি উলামা পরিষদের সভাপতি সোলায়মান কাসেমীসহ ১০-১৫ জন। লালন সংঘের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি ফরহাদ হোসেন তরফদার ও সবুজ মিয়া। দুপক্ষের মধ্যস্থতা করেন মধুপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার।
“আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমরা এখানে মতাদর্শ প্রচারের জন্য এই আয়োজন করিনি। এখানে লালনের মতাদর্শ নিয়ে কোনো আলোচনা ইতোপূর্বে হয়নি, এবারও হবে না। আমরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করি শুধু বিনোদনের জন্য। এ ছাড়া যে গানগুলো নিয়ে তাদের আপত্তি, সেই গানগুলো অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হবে না।”
পোস্টে সবুজ মিয়া লেখেন, “‘লালনকে বাদ দিয়ে সাধারণ কনসার্ট করলে কোনো আপত্তি থাকবে না’; শুরুতে হেফাজত নেতারা এমন কথা জানালেও পরে বলছেন, ‘কিছুতেই অনুষ্ঠান করতে দেবেন না’।”
হেফাজতে ইসলামের মধুপুর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল্লাহ বলেন, “ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় আমরা ভ্রান্ত লালন মতাদর্শ প্রচারে আপত্তি জানিয়েছি।”
ছুটিতে ছিলেন জানিয়ে মধুপুর থানার ওসি এমরানুল কবির বলেন, “বুধবার বিকালে এসে শুনেছি, ইসলামী দলগুলো অনুষ্ঠান করতে বাধা দিয়েছে।”