মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকার ও ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা : প্রিন্সিপালসহ গ্রেপ্তার ২
১৭ নভেম্বর ২০২২, ১১:০১ এএম
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মাদ্রাসা-ই তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসায় ১৩ বছর বয়সী সাজ্জাদ হোসেন নামক এক মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনায় একজনকে এবং ঘটনা ধাপাচাপা দেওয়ার অভিযোগে অন্য আরও এক শিক্ষকসহ মোট দুজন মাদ্রাসাশিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উক্ত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ এর নির্দেশনায় মাদ্রাসা সুপারকে তাৎক্ষণিক আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ এবং এসপি মাহফুজ্জামান আশরাফ এর নির্দেশনায় ঘটনার মূল অভিযুক্ত আবদূর রশিদকে রায়পুর থানা পুলিশের হেফাজতে নিয়ে আসে পুলিশ।
‘শুধু এবারই প্রথম নয়, এর আগেও ঐ শিশু শিক্ষার্থী মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুর রশিদের হাতে একাধিকবার যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে বলেও জানা গেছে।’
গতকাল বুধবার সন্ধ্যার দিকে তাঁদের আটকের পর দিবাগত রাত ১২টার দিকে রায়পুর থানায় এই দুজনকে আসামি করে মামলা করেন ওই ছাত্রের বাবা।
গ্রেপ্তার শিক্ষকেরা হলেন—মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আবদুল ওয়াজের (৩৫) ও শিক্ষক আবদুর রশিদ (২৬)। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়।
এদিকে ভিকটিম সাজ্জাদের লোমহর্ষক বর্ননায় বেরিয়ে আসতে শুরু করে থলের বেড়াল! ভিকটিম জানায়, এইবারই প্রথম নয়, এর আগেও রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে ৬/৭ বার তাকে তার রুম থেকে ডেকে নিয়ে মুখ চেপে ধরে করা হয় বলাৎকার! ঘটনাটি সে মাদ্রাসা প্রিন্সিপালকে জানালে বারবারই ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টায় তার অভিভাবকদের না জানানোর অনুরোধ করেন এবং ডাক্তারের নিকট পাঠিয়ে চিকিৎসা করিয়ে ওষুধ কিনে দেন।
নির্যাতনের অভিযোগ করা ছেলেটির একাধিক স্বজন জানান, সে মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্র। শিক্ষক আবদুর রশিদ নানা অজুহাতে ছেলেটিকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যৌন নিপীড়ন করে আসছিলেন। ভয়ে সে কাউকে কিছু বলেনি। বুধবার বিকেলে ওই মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে এসে বিষয়টি পরিবারকে জানায় সে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসাছাত্রের বাবা ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। ‘মাদ্রাসার সুপার আবদুল ওয়াজের ও শিক্ষক আবদুর রশিদকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষক আবদুর রশিদের নিপীড়নে মাদ্রাসা সুপার সহযোগিতা করতেন উল্লেখ করে ওসি আরও বলেন, ‘ছাত্রদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ধাপাচাপা দিতে একাধিকবার শিশুটিকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন মাদ্রাসা সুপার আবদুল ওয়াজের।’
ওসি বলেন,‘তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’