শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার পর বাঁচতে তাবলীগে পালিয়ে যায় নাসির

Anweshan Desk

Anweshan Desk

২১ জানুয়ারী ২০২৩, ০০:১২ এএম


শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার পর বাঁচতে তাবলীগে পালিয়ে যায় নাসির

আসামী নাসির

গাজীপুরের মাজুখান বাগেরটেক এলাকায় ছয় বছরের এক শিশুকে বলাৎকার ও চিকৎকার করায় হত্যা করে নিজেকে সন্দেহের বাইরে রাখতে ৪০ দিনের জন্য তাবলিগে চলে যান নাসির মিয়া নামের এক ব্যক্তি। তাবলিগ থেকে ফিরে এসে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার।

ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর শিশু বলাৎকারচেষ্টা ও হত্যা মামলার এই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গাজীপুর ইউনিট। পালিয়ে থাকার কৌশল হিসেবে নাসির চিল্লায় চলে যান বলে পিবিআইকে জানিয়েছেন।

পিবিআই জানায়, পুবাইলে ২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরে দুপুরে ছয় বছরের এক শিশু নিখোঁজ হয়। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরদিন উত্তরপাড়া থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুটির নানি অজ্ঞাতদের আসামি করে পুবাইল থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআইয়ের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুর মহানগরীর মাজুখান উত্তরপাড়ায় মো. ফারুকের মুরগির দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন নাসির মিয়া। মালিক ফারুক দোকানে সময় দিতেন না। নাসির মিয়া নিজেই মুরগি ও মুরগির খাবার বেচাকেনা করতেন। ফিড খেয়ে ফেলার সময় মুরগি তাড়ানোর জন্য দোকানদার নাসির খেলনা পিস্তল দিয়ে মুরগি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তেন। পাশের গলির জুয়েলের ছেলে সিহাব মাঝেমধ্যে তাঁর দোকানে আসত এবং খেলনা পিস্তলের ছোড়া গুলি শিশু সিহাব কুড়িয়ে আনত। নাসির মাঝেমধ্যে সিহাবকে চিপস কিনে দিতেন। শিশু সিহাব নাসিরকে মুরগি চাচ্চু বলে ডাকত। এভাবে ভিকটিম সিহাবের সঙ্গে নাসিরের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর দুপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সময় সিহাব মুরগি দোকানি নাসিরের রুমে যায়। তখন নাসির সিহাবকে ধর্ষণ করতে চাইলে সে চিৎকার দেয়। তখন নাসির মুখ চেপে ধরলে সিহাবের দেহ নিথর-নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে সিহাবের মরদেহ খাটের নিচে রেখে দরজা লাগিয়ে নাসির বাইরে চলে যান। পরে ভোররাতে সিহাবের মরদেহ সালাম মুন্সির বাড়ির পাশে ফেলে রাখেন নাসির। ঘটনার তিন দিন পর নাসির এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম চলে যান। দুই দিন পর চট্টগ্রাম থেকে ফিরে আসেন নাসির। এর এক সপ্তাহ পর নাসির ৪০ দিনের জন্য চিল্লায় চলে যান।

নাসির বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন উল্লেখ করে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, 'ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যাকাণ্ড ঘটায় নাসির। গত সোমবার মাজুখান এলাকা থেকে নাসিরকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে নাসির হত্যায় জড়িত বলে স্বীকার করে। বৃহস্পতিবার ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।'

জাতীয় থেকে আরও


Link copied