চট্টগ্রামের আনোয়ারায় মাদ্রাসা ছাত্রকে শরীর কেটে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে নির্যাতন
২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০১:৪৪ এএম
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পড়া শিখতে না পারায় ছাত্রকে ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে দেন এক মাদ্রাসা শিক্ষক। এমনকি নির্যাতনের পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই শিক্ষার্থীকে ১৮ দিন মাদরাসায় আটকে রেখে ভয় দেখান ওই শিক্ষক। এমন নির্মম ঘটনাটি ঘটে আনোয়ারা উপজেলার ইমাম আজম (র.) ইন্টারন্যাশনাল হিফজুল কোরআন মাদ্রাসায়। ভুক্তভোগী ছাত্রের বয়স ১২ বছর। সে ওই মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্র এবং একই উপজেলায় তার বাড়ি।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রের মায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শনিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে ওই শিক্ষককে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম আবু হানিফ (৩০)। তাঁর বাড়ি মাদ্রাসার পাশেই।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ১৯ দিন আগে যথাসময়ে পড়া শিখতে ব্যর্থ হয় রিয়াদ। এ সময় হানিফ তাকে প্রথমে বেত্রাঘাত করে। পরে শরীরের অংশবিশেষ ব্লেড দিয়ে কেটে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে দেয়। এ সময় শিশুটি ব্যথায় চিৎকার করলে তার মুখ কাপড় দিয়ে চেপে ধরে হানিফ। এরপর শিশুটিকে ১৮ দিন মাদরাসায় আটকে রাখা হয়।
গত বৃহস্পতিবার শিশুটি বাড়িতে গেলে তার গায়ে কাটা দেখে অভিভাবকরা রিয়াদের কাছে এর কারণ জানতে চান। প্রথমে কিছু না বললেও পরে নির্যাতনের বিষয়টি মা-বাবাকে জানায় শিশুটি। গতকাল বিকেলে মাদরাসার অন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও এই হুজুরের নির্যাতনের আরও ঘটনা প্রকাশ করে। ইয়াছিন আরাফাত নামে এক শিক্ষার্থীর হাতের আঙুলে আগুন দেওয়ার ঘটনাও বর্ণনায় বেরিয়ে আসে এ সময়। শিশু রিয়াদ জানায়, পড়া শিখতে পারিনি। তাই হুজুর ব্লেড দিয়ে কেটে মরিচের গুঁড়া দিয়েছেন। এ ঘটনা কাউকে বললে আরও মারবেন বলেও ভয় দেখিয়েছেন।
রিয়াদের বড় ভাই আসাদুজ্জামান ছোটন বলেন, আমার ভাই বৃহস্পতিবার বাড়িতে গেলে তার গায়ে কাটা দেখে জিজ্ঞাসা করি। সে কিছু বলতে ভয় পাচ্ছিল। পরে সে জানায়, হুজুর তার গা ব্লেড দিয়ে কেটে মরিচের গুঁড়া দিয়েছে।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু হানিফ নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করে বলে, আমার দোষ হয়েছে, আমি ক্ষমা চাই। ভবিষ্যতে আর করব না।
আনোয়ারা থানার ওসি মির্জা মোহাম্মদ হাসান বলেন, হেফজ মাদরাসায় শিক্ষার্থী নির্যাতনের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে অভিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অভিভাবককে থানায় নিয়ে আসি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।