দুদকের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য চুরি করে কোটি টাকার প্রতারণা : গ্রেফতার ৪
১৭ অগাস্ট ২০২৩, ২২:০১ পিএম
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওয়েবসাইট থেকে তথ্য চুরি করে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন করে ঘুষ চেয়ে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল একটি প্রতারক চক্র।
এই চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের লালবাগ বিভাগ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম সোমবার যাত্রাবাড়ী, মুগদা ও এয়ারপোর্ট এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। বুধবার থেকে তারা তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডে আছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার আ্যন্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) খোন্দকার নুরুন্নবী।
তিনি জানান, দুদকের ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে অভিযোগ গঠন, অভিযোগ হতে অব্যাহতি, দায় মুক্তি সংক্রান্ত তথ্য চুরি করে কিছু কনস্ট্রাকশন ঠিকাদার ও ভুয়া সাংবাদিক মিলে বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র, সংসদ সদস্য, চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, নির্বাচিত প্রতিনিধিসহ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফোন করে দুদকের মহাপরিচালক, পরিচালক ও উপ-পরিচালকদের নামে কোটি কোটি টাকা ঘুষ হিসেবে হাতিয়ে নিচ্ছিল। গত রোববার দুদকের নামে ঘুস গ্রহণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম রমনা থানায় গত ১৩ আগস্ট মামলার ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. সেলিম ওরফে তানভীর ইসলাম ওরফে শফিকুর রহমান (৩৯), মো. সোহাগ পাটোয়ারী (৩৮), আব্দুল হাই সোহাগ (৩৮) ও মো. আজমীর হোসেন (৩৭)। তাদের হেফাজত থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সাতটি মোবাইলফোন, ১০টি সিম, কর্ডলেস মাউথপিস, পত্রিকা, মানবাধিকার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাতটি ভুয়া আইডি কার্ড, দুদক কর্তৃক বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানের প্রতিবেদন ১২টি এবং বিভিন্ন ব্যক্তির ফোন নম্বর লেখা তিনটি নোটবুক উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, কোনো ব্যক্তি হঠাৎ করে সম্পদশালী হলে তাদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের বিরুদ্ধে দুদক বরাবর ভুয়া অভিযোগ তৈরি করা হতো। এরপর বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে তাদের কাছে পাঠিয়ে মোটা অংকের অর্থ দাবি ও আদায় করে ভুয়া তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে তাদের ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পাঠানো হতো,
টার্গেট করা প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তিদের নামে দুর্নীতির অভিযোগের চিঠি বানিয়েও পাঠানো হতো।তারপর দুদকের কমিশনার, মহাপরিচালক, পরিচালক ও উপ-পরিচালকদের নাম ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে নিতেন। প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ করতেন বলে তারা ৮০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি জানায়, এর আগে গত জুনে আরেকটি মামলায় তিনজন প্রতারকের সঙ্গে দুদকের একজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় প্রতারকরা দুদকের যে উপ-পরিচালকের নাম ব্যবহার করেছিল তার বা তার আত্মীয়দের সঙ্গে প্রতারকদের সম্পর্ক আছে কি না ডিবি পুলিশ তা খতিয়ে দেখা হবে।